আমিনাবাদ ৩নং ওয়ার্ডের কৃষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম(৪৮) বলেন, আমি বিশ বছর যাবৎ কৃষি কাজ করি। প্রতিবারের মত এবারেও বাজার থেকে চড়া দামে বীজ কিনেছি এবং কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী বীজতলা তৈরি ও সার প্রয়োগের মাধ্যমে আট শতাংশ জমিতে বীজতলা করেছি। অতিরিক্ত বর্ষার ফলে বীজতলার সব চারা নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু আমার একারই না আমাদের এলাকার বেশিরভাগ কৃষকেরই আমন ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন জমির পানি শুকিয়ে এলে চারা কিনে আবার চারা রোপন করার পরিকল্পনা করছেন। দেখা যায় অনেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করার পরিকল্পনা করেছেন। এখন বীজতলা নষ্ট হওয়ার ফলে আবার বাজার থেকে চারা কিনে রোপন করতে হবে। এছাড়াও যেই চারা রোপন করার কথা ছিল ভাদ্র মাসের শুরুর দিকে সেই চারা ভাদ্র মাসের শেষের দিকে এখনো রোপন করা হয়নি। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশংকায় দিশেহারা সকল কৃষকরাই।
এই বিষয়ে চরফ্যাসন উপজেলার কৃষি অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান বলেন, আমন ধান চরফ্যাসনের প্রধান ফসল। চরফ্যাশন উপজেলায় এবার প্রায় চার হাজার আটশত সত্তর হেক্টর জমিতে আমন ধানের বীজতলা আবাদ করা হয়েছে। তবে আমাদের চরফ্যাশন নি¤œাঞ্চল হওয়ায় এখানে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা যায়। আর কিছুদিন যাবৎ অতিরিক্ত বৃষ্টি ও বন্যার ফলে আরো বেশি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে প্রায় পনেরোশত থেকে আঠারোশত হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বেশিরভাগ কৃষকেরই ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে, কৃষি অফিস থেকে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের কিছু বীজ দেওয়া হয়েছিল এবং কৃষকদের কাছেও বাড়তি কিছু বীজ থাকে যার মাধ্যমে তারা আবার বীজতলা তৈরি করে জমিতে চারা রোপন করতে পারবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে আদর্শ জমি নির্বাচনের দিকে। এছাড়াও যাদের উঁচু জমিতে বীজতলা রয়েছে এবং বিক্রি করার উদ্দেশ্যে বাড়তি চারা উৎপাদন করেছেন তারা বৃষ্টির পানি কমে গেলে মূল জমিতে চারা রোপন করতে পারবে এবং বাড়তি চারা বিক্রি করার ফলে যাদের চারা নষ্ট হয়ে গেছে তারা বাজার থেকে ক্রয় করে জমিতে রোপন করতে পারবে। এছাড়া ধানের কিছু জাত রয়েছে যেগুলো বৃষ্টির পানি সহিঞ্চু হওয়ায় চারা কয়েকদিন পানির নিচে থাকার পরেও নষ্ট হয়না যেমন: ব্রি ৫২। চরফ্যাসনের অনেক কৃষকই এই জাতের ধান আবাদ করেছেন। যার মাধ্যমে কিছুটা হলেও ফসল উৎপাদনে সহায়তা হতে পারে।
কৃষি বিষয়ক রেডিও মেঘনার সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘কৃষি ও কৃষক’। শুনুন ৯৯.০ এফএমএ সপ্তাহের প্রতি বুধবার বিকেল ০৫:০০ টায়।