চরফ্যাশনে আধুনিক জিনিসপত্রের ভিড়ে মাটির দাম বৃদ্ধিসহ নানা সংকট এ শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। পুরো উপজেলা জুড়ে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি মৃৎশিল্পী পরিবার জানায় হাজার বছরের ঐতিহ্য বহনকারী মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা কমতে থাকায় প্রাচীনকাল থেকে বংশানুক্রমে গড়ে ওঠা গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে।
চরফ্যাশন উপজেলার কালিয়াকান্দী ২নং ওয়ার্ডের পলাশ চন্দ্র পাল জানান, এখন আর সেই আগের মতো এখন আর ব্যস্ততা নেই মৃৎশিল্পীদের। সারি সারি মাটির তৈজসপত্র এখন তেমন নজরে পড়ে না। মৃৎশিল্পীরা মাত্র কয়েকটি পরিবার এখন বাপ-দাদার এই শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন।
তিনি আরো জানান, মাটির এসব কাজ আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। পূর্বপুরুষরা এই কাজ করে আসছে তাই আমরাও করছি। মাঠ থেকে মাটি এনে পণ্য তৈরি করে বিক্রি করে আমরা জীবিকা চালাই। আগে মাটির তৈরি সকল জিনিসপ্রত্র তৈরি করলেও এখন শুধু দধির হাঁড়ি তৈরি করি। দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ টি হাঁড়ি তৈরি করা হয়। বড় হাঁড়ি ২০ টাকা, মেজো হাড়ি ১৫ এবং ছোট হাড়ি ১০ টাকায় বিক্রি হয়ে মাসে ৬০ হাজার টাকা আসে তাদের। যেই ৬ হাজার হাঁড়িতে মোট খরচ আছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। বাকি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে সংসারের সবাই মিলে কোন ভাবে কাটাচ্ছেন দিন।
অন্যদিকে বাসু পাল আক্ষেপ করে বলেন, ব্যবসায় মন্দার কারণে আমাদের এখাকার মৃৎশিল্প প্রস্তুতকারী বাপ-দাদার এই পেশা ধরে রেখেছে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার। সামান্য আয়ে সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকে। ব্যবসা না থাকায় অনেকে এখন অন্য কাজ করে সংসার চালাচ্ছে। মেলামাইন, সিরামিক ও প্লাস্টিকের কারণে আমরা তাদের সাথে খরচ আর তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না। তবুও বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতে করছেন এই কুমারের কাজ।
অধরা ইসলাম ও জান্নাত
রেডিও মেঘনা-চরফ্যাসন।