বর্তমানে শিক্ষিত যুবকরা চাকরি না করে দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় ভোলার চরফ্যাসনেও কুলের আবাদ করছে বানিজ্যিক ভাবে। ইতোমধ্যে এ উপজেলার অনেক যুবকরাই এখন কুল চাষে আগ্রহী করে তুলছেন নিজেকে। হয়ে উঠেছেন উপজেলার একজন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা।
এমনই একজন সফল উদ্যোক্তা ও শিক্ষিত যুবক জাহানপুর ৮নং ওর্য়াড সুন্দরখালী এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিম। তিনি বাড়ির পাশে পতিত জমিতে বড়ই চাষ করে একদিকে নিজে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন অন্যদিকে পুষ্টির ঘাটতি পূরণসহ জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছেন।
বরই চাষি আব্দুর রহিম জানান, পড়াশোনা শেষ করার পর মেলেনি মনের মতো চাকুরি। এতে মন খারাপ হলেও অলস বসে থাকেননি তিনি। নিজের উদ্যোগে ভাগ্য বদলের প্রতিজ্ঞা নিয়ে বাড়ির পাশের তিন একর জমিতে শুরু করেন হাইব্রিড জাতের বলসুন্দরি, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরি ও টক-মিষ্টি বড়ই চাষ। ২০১৫ সালে ফরিদপুর থেকে এই চার জাতের চারা সংগ্রহ করে থাকেন তিনি। গত বছর ১০০ টাকা দরে বড়ই বিক্রি করে জমি থেকে ফলন পেয়েছেন ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। সকল খরচ গিয়ে লাভ ছিলো ৩০ হাজার টাকা। বর্তমানে জমিতে রয়েছে ২ হাজার চারা। মৌসুমে ৮ জন কর্মী এই বাগানে কাজ করে থাকেন। এতে করে তাদের কাজের মাধ্যমে হচ্ছে জীবিকা নির্বাহ।
তিনি আরো জানান, বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে যখন বড়ই গাছে ফুল আসে তখন থেকে পরিচর্যা শুরু করা হয়। বড়ই উচ্চ ফলনশীল জাতের ফল হওয়ায় শীতকালে বাজারে এর চাহিদা থাকে ব্যাপক। বাগানে কোনো ধরনের কীটনাশক বা রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না ফলে এই বড়ই খেতে সুস্বাদ, পুষ্টিগুণও অনেক বেশি পাওয়া যায়। সঠিক পরিচর্যায় গাছগুলো বেড়ে উঠছে ফলে ফলন ঠিক ভাবে এলে এবছর আরো বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
চরফ্যাসন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকুনুজ্জামান জানান, শিক্ষিত ও বেকার যুবকরা চাকুরির পেছনে না ছুটে কৃষি কাজে ঝুকছেন। কুলের আবাদের জন্য চাষের জমির খুব একটা প্রয়োজন হয় না বলে এই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন । বাড়ির আনাচে-কানাচে, পুকুর পাড়ে বা আঙিনায় পড়ে থাকা অনুর্বর মাটিতেও গর্ত করে চাষ করা যায়। পতিত জমিতে কুল চাষ করে ইতোমধ্যে অনেক চাষি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন, অন্যদিকে পুষ্টির ঘাটতি পূরণসহ জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। জানান এভাবেই শিক্ষিত যুবকরা চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষি উদ্যোক্তা হলে জীবন বদলাবে ঘটবে নতুন বিপ্লব।
Recent Comments