ভোলার নাগরিক সমাজের দাবি, ইলিশ রক্ষায় ক্ষুদ্র জেলেদের নিরাপদ জীবিকা এখনই নিশ্চিত করা জরুরি। “শুধু খণ্ডকালীন সহায়তা-নির্ভর সমাধান নয়, চাই বিকল্প ও টেকসই আয়ের সুযোগ এবং প্রশিক্ষণ”।
কোস্ট ফাউন্ডেশন আজ ২০ অক্টোবর ২০২৫, রোজ সোমবার, কোস্ট ভোলা সেন্টার, ভোলা সদর, ভোলায় “শুধু খণ্ডকালীন সহায়তা-নির্ভর সমাধান নয়, চাই বিকল্প ও টেকসই আয়ের সুযোগ এবং প্রশিক্ষণ” শীর্ষক এক সেমিনারের অনুষ্ঠিত হয়েছে। সনত কুমার ভৌমিক, উপ-নির্বাহী পরিচালক, কোস্ট ফাউন্ডেশন এর সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপত্বি করেন মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী কোস্ট ফাউন্ডেশনের সম্মানিত সাধারণ পরিষদের সদস্য, এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ ইকবাল হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ভোলা।
বক্তারা বলেন ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় ক্ষুদ্র জেলেদের সরকারি সহায়তা যথাসময়ে পৌঁছে দেয়া এবং এর কার্যকর তদারকি করা জুরুরি। চাল দেয়া বন্ধ করে মোবাইলে টাকা দেয়া, পাশাপাশি জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান, প্রশিক্ষণ ও ভর্তুকি কার্যক্রম সম্প্রসারনের উপর গুরুত্ব দেন। বক্তারা আরও বলেন বর্তমান জেলেদের তালিকা জেলে প্রতিনিধিদের সংগে নিয়ে সংশোধন করতে হবে।
মোসাম্মাৎ রাশিদা বেগম, সহকারী পরিচালক, কোস্ট ফাউন্ডেশন, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, ভোলার নিবন্ধিত জেলেদের ৬০% প্রতিবছর নিষেধাজ্ঞাকালীন ২-৩ মাস আয়হীন অবস্থায় থাকে। সরকারি ৪০ কেজি চালের সহায়তা অপ্রতুল এবং বেশিরভাগ সময়ই তা দেরিতে পৌঁছায়।
সনত কুমার ভৌমিক বলেন ইলিশ হলো গভীর পানির মাছ, কিন্তু ডুবু চরের কারনে ইলিশ মাছ নদীতে আসতে বাধাগ্রস্থ হছে, প্রতিবছর ৪.৫%-৫% ইলিশমাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এখনি সরকারকে এবিষয়ে করনীয় নির্ধারন করা প্রয়োজন। জেলে পরিবারের সদস্যরা বিশেষ করে নারী ও যুবকরা বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে ছাগল পালন, মাছ চাষ, মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ, সব্জি চাষ ইত্যাদি করতে পারেন।
জেলে নারী পরিবারের সদস্য রিমা বেগম বলেন সরকারী সহায়তার বেশীরভাগই জেলে নয় এমন পরিবারের কাছে চলে যাচ্ছে। জেলে নারী আকলিমা বেগম বলেন যে নারীরা আয়বর্ধনমূলক কাজের সাথে জড়িত তাদের পরিবারের জেলেরা নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় নদী বা সাগরে মাছ ধরতে যান না।
সাংবাদিক নজরুল হক অনু বলেন মেঘনা নদীর চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল ৯০কি.মি এবং তেতুলিয়া নদীর সীমানা ১০০কি.মি. এর বাহিরে গিয়ে মাছ ধরলেও অনেক সময় জেলেদের আটক করা হয়।
প্রধান অতিথি মোঃ ইকবাল হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ভোলা বলেন আমাদের নদীতে একসময় প্রায় ২৬০ প্রজাতির মাছ ছিল এবং সমুদ্রে প্রায় ৪০০ প্রজাতির মাছ ছিল, কিন্তু বর্তমানে নদীতে ২৫/২৬ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। আমাদের জেলেদের জন্য বৈধ জাল বিতরন করা হচ্ছে, ভিজিএফ সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য গবাদী পশুপালনের জোর দেন।
মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী বলেন জেলেরা মহাজনি ঋনের কারনে নিজেদের ইচ্ছেমত মাছ বিক্রি করতে পারেন না। তিনি জোর দিয়ে বলেন অজেলেদেরকে তালিকা থেকে যত দ্রুত সম্ভব বাদ দিতে হবে।