ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস উপকূলবাসীর নিত্যসঙ্গী। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ঘূর্ণিঝড় যেন এক ভিন্ন রুপ দেখিয়েছে চরাঞ্চলের মানুষকে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল কেটে গেলেও ঝড়ের ক্ষত চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত ভোলার চরফ্যাসনের বিছিন্ন চর ঢালচরের বাসিন্দারা। কারও ঘর নেই, কারও ভিটার মাটি নেই। এক বেলা খাবার খাওয়ার পরিস্থিতিও নেই অনেকের। জোঁয়ারের পানিতে ভেসে গেছে আসবাহপত্রসহ অসংখ্য গবাদী পশু। রাস্তাঘাট ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে মেঠো পথ।
সরেজমিনে গিয়ে ঝড়ের ভয়াবহ চিত্রে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তা-বে বিধ্বস্ত হওয়া বাড়িঘর মেরামত করতে পারেননি অনেকে। ফিরে আসতে পারেননি স্বাভাবিক জীবনে। সব মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে রিমালে বিধ্বস্ত ঢালচর এলাকার বাসিন্দারা।
ঢালচরের বাসিন্দা হোসনেআরা, হাসনুর বেগম ও মোঃ মনির হোসেনসহ আরো অনেকেই এবারের ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে তাদের একমাত্র মাথাগোঁজার ঠাঁই ভেঙে যায়। এখন পরিবারের সদস্য নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন খোলা আকাশের নীচে।
তারা বলছেন, সিডর-আইলার পর যত দুর্যোগ মোকাবিলা করিছি, এতো বড় দুর্যোগ আর দেখিনি। বার বার মনে হচ্ছিল এবার বুঝি আর রেহাই নেই। এই বসতি ছেড়ে কোথায় যাবে তাই দুর্যোগ-দুর্ভোগেও মাটি কামড়ে পড়ে থাকি নদীর পারে।
রেনু বেগম, বিবি জাহেদা বলেন, ঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যেনো ঢালচরের কিশোরী ও নারীদের বিপদের শেষ নেই। নেই নিরাপদ টয়লেট ব্যবস্থা। নেই সুপেয় পানির ব্যবস্তাও। তাই কিশোরী ও নারীদের কাপড় ধোঁয়া থেকে শুরু করে সাংসারিক সকল ধোঁয়া-মুছার কাজে সাগরের লোনা পানিই হচ্ছে তাদের একমাত্র ভরসা। এতে করে নারী কিশোরীদের শরীরে বিভিন্ন রোগ-বালাই বাসা বাঁধছে। রীতিমতো অসহায় অবস্থায় পড়ে আছেন ঢালচর নারী কিশোরীরা।
কীভাবে ঘর মেরামত করবে! কীভাবে জীবিকা চালাবে তার কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছে না ঢালচরের বাসিন্দরা।
মৌসুমী মনীষা ও সুরভী
রেডিও মেঘনা-চরফ্যাশন।