উপকূলীয় একটি উপজেলা চরফ্যাসন। এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবিকা নদী ও সাগরনির্ভর। জেলেরা এখন জীবিকার তাগিদে ব্যবহার করছেন অবৈধ কারেন্ট জাল ও বিন্দি জাল। আর এতে ধ্বংস হচ্ছে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্য।
৪৫ বছর সয়সি মনোয়ারা বেগম বলেন, আজ প্রায় ১৫ বছর ধরে মাছ ধরে খাই/ সংসার চালাই। বৈশাখ জৈষ্ঠ্য মাসে ১শত চিংড়ি মাছে বাচ্চা বা পোনা ২শত থেকে দেড়শত টাকা ও ৬০-৭০ টাকায়ও বিক্রি করে থাকেন। সারাদিন রোদে শুকাই বৃষ্টিতে ভিজি। এভাবেই সংসার চলে। অন্য কোনো কাজ নেই।
বিন্দী, টানা, মশারী, প্লাস্টিক নেট জাল দিয়ে সাধারনত সকল প্রকার চিংড়ির রেনু ধরা হয়। এ জাল এত সূক্ষ্ম যে বড় মাছের সাথে অগণিত ছোট মাছও মারা যাচ্ছে। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাছ ধ্বংস হলেও বিবি সালেমা (৭০) বলেন, অভাবের কারণে ছোট ছোট চেউয়া মাছ, বুথকুলি মাছ, চিংড়ি মাছ, হাইট্টা মাছ ও ভাট্টা মাছ ধরছেন তিনি। ৩০ বছর ধরে খুঁচি জাল, গোলদা জাল দিয়ে মাছ ধরে সংসার চালাই। কোনো দিন ১শত টাকার বেচতাম, কোনো দিন দেড়শত টাকার বেচতাম। কারেন্ট জাল মৎস্য অফিসারেরা দেখে তালে নিয়ে পুইড়া ফেরায়। পরে জাল রাইখা জান নিয়া দৌঁড়াই হয়।

এছাড়াও আরো বলেন, পানিসহ একটি পাতিলে করে চামচ দিয়ে কাটিং করে। কাটিং করার পর ঐ রেণুগুলো রেখে বাকি পানি নদীতে ফেলে দিতে হয় এই দায়িত্ববোধ তারা নিতে চায় না। এই কাজ থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে অনুরোধ করেন মৎস্য কর্মকর্তা।
চরফ্যাশনের জেলে পরিবারগুলোর জন্য এখন দরকার বিকল্প আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা। তা নাহলে নদী হারাবে তার প্রাকৃতিক সম্পদ, আর জেলেরা হারাবে তাদের জীবিকা। মেঘনা বাঁচুক, বাঁচুক জীববৈচিত্য।
Recent Comments