আজ (২২ জুন ২০২৪) কোস্ট ফাউন্ডেশন ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়নে সাইক্লোন রিমাল ক্ষতিগ্রস্ত ১০৪ পরিবারের মাঝে মোবাইল ব্যাংককিং এর মাধ্যমে ৬০৯০ (চার্জসহ) টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। কোস্ট ফাউন্ডেশন স্টাট ফান্ড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় ‘‘Emergency Response of cyclone Remal Project’’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। উল্লেখ্য যে, গত ২৬ মে ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে শক্তিশালী ঘুর্ণিঝড় রিমেল। ভোলা জেলায় ২৪৬৫ পরিবারের ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধস্ত হয়। আজ পযর্ন্ত ৫৫৭ পরিবারকে এই সহায়তার আওতায় আনা হলো এবং আরো ৮৪৩ পরিবার এই সহায়তার আওতায় আসবে। ফান্ড বাংলাদেশ দুর্যোগকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে জরুরি সাড়াদান করে থাকে। আজ এই প্রকল্পটি আওতাধীন ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চর মানিকা ইউনিয়নের নিলীমা জ্যাকব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে অর্থ প্রদান করা হয়।
এইসময় উপস্থিত ছিলেন চরফ্যাশন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব জয়নাল আবদীন আখন, এবং চরমানিকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম সোহাগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, প্রধান শিক্ষক, গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।
জয়নাল আবদীন আখন বলেন, ঘুর্ণিঝড় বিমালে জলোচ্ছ্বাসের পানি অনেক বেশি সময় থাকাতে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এমন ধরনের ঘুর্ণিঝড় তিনি আগে দেখেননি। মানুষ কম মারা গেলেও ঘরবাড়ির ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে। সাধারনত বেড়িবাঁধের বাইরের পরিবারগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারি সহায়তা এখনও আসেনি। তবে তারা চেষ্টা করছেন। বরাদ্দ পেলে মানুষের জন্য কাজ করা হবে।
ঘুর্ণিঝড় রিমালে চরফ্যাশন উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়নের চর ফারুকি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ইমাম হোসেন বলেন, বেড়ির বাইরে বাড়ি হওয়ায় বাতাস ও বন্যা আসার সাথে সাথে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। রিমালে তাদের বসত বাড়ি, টয়লেট, রাস্তাঘাট, ঘরের আসবাপত্রসহ সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তারা এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের সহায়তা পায়নি। কোস্ট ফাউন্ডেশন থেকে এই প্রথম তারা সহায়তা পাচ্ছেন । নগদ ৬০৯০ টাকা পেয়ে তিনি অনেক খুশি। ইমাম হোসেন জানান, এই টাকা দিয়ে ঘর মেরামতের কাজ করবেন। তবে এখনো রাস্তাঘাট ঠিক না হওয়ায় চলাফেরা করতে অনেক অসুবিধা হয় চরমানিকা এলাকার লোকজনের।
অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত বৃদ্ধা ময়ফুল, চোখে সমস্যা থাকার কারণে চোখে দেখেননা ঠিকমতো। দুজনের সংসার চলে কোন রকমে। পানিতে ভিটে মাটি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন তারা। বয়সের ভারে নুয়ে পরা বৃদ্ধাদের তিনবেলা খেতেই কষ্ট হয়। তার উপর ঘর মেরামতের কাজ আকাশ পরিমান চিন্তার। তবে আজ কিছুটা চিন্তা থেকে মুক্ত হয়েছেন বৃদ্ধ এই দম্পতি। ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর প্রথম আর্থিক সহায়তা পান চরমানিকা ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলো। তারা সবাই বললেন, টিন ও কাঠ এনে ঘরটাগুলো মেরামত করবেন।
সময় উপস্থিত ছিলেন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা রাশিদা বেগম, মো: ইউনুচ, খোকন চন্দ্র শীল, মো: শাহিনুর ইসলাম, মোঃ বাবুল, নিশি বেগমসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।