পঞ্জিকার হিসাবে এখন ভরা কার্তিক। পৌষ আগমনের বাকি দেড় মাস। কিন্তু প্রকৃতি এখনই শীতের পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে। হেমন্ত প্রেমী কবি জীবনানন্দ দাশের ‘নির্জন স্বাক্ষর’ কবিতায় হেমন্ত ধরা দিয়েছে। কবি তার ভাষায় লিখেছেন, ‘যখন ঝরিয়া যাব হেমন্তের ঝড়ে, পথের পাতার মতো তুমিও তখন আমার বুকের পরে শুয়ে রবে?’। ঠিক তেমনি শরতের শেষে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হেমন্ত।
হেমন্তের আগমনে প্রকৃতি সেজেছে এক অপরুপ সাজে। সন্ধ্যার মৃদু কুয়াশা, হিমেল বাতাস, রাতের রানী শিউলী, সকালে সবুজ ঘাসের মাথায় জমে থাকা শিশির কণাই জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে এসেছে হেমন্ত। হেমন্তর আগমন ঘটলেই যেন শান্ত হয়ে উঠে উত্তপ্ত এই প্রকৃতি। হেমন্তের আগমনে গ্রামের মেঠোপথে সকালে হাঠলেই পা ভিজে যাই শিশির কণাতে।
হেমন্ত মানেই শীতের পূর্বাভাস। কুয়াশাভেজা শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে হেমন্ত উকি দেয় দোর গোড়ায়। শিশির ভেজা ঘাস আর কুয়াশার চাদর সেটিই জানান দিচ্ছে। প্রকৃতি সুশোভিত হচ্ছে এক নতুন আমেজে।
গ্রাম বাংলা সেজে উঠছে নতুন রূপে। শীতের সকালে খেঁজুর রস খাওয়া, কুয়াশাভেজা পথে চাদর মুড়ি দিয়ে পথচলা আর মুহুর্মুহু গানে কৃষকের ধান কাঁটা, দিন শেষে ধান মাড়াই আর রাত জেগে জেগে তা উনুনে সেদ্ধর ব্যস্ততায় ভরে উঠবে কৃষকের জীবন।
স্থানীয়রা বলছে, ‘হেমন্ত মানেই যেমন শীতের আগমনী বার্তা। অপরদিকে গ্রামবাংলার মানুষের জীবনে হেমন্ত মানেই নবান্ন উৎসবের আমেজ। আগে হেমন্ত এলেই এই জনপদের মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করতো।
গ্রাম বাংলায় হেমন্তের রূপ-শোভা কবি নজরুল ভাষায়, ‘অঘ্রাণে মাগো আমন ধানের সুঘ্রাণে ভরে অবনী’।