মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন একটি উপকূলীয় এলাকা। যেখানে ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোরীদের বিয়ের উপযোগী মনে করা হয় এবং এই বয়সেই তড়িঘড়ি করে বসানো হয় বিয়ের পিরিতে।
ওই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কিশোরী তাসলিমা (১৮)। দু’চোখে নার্স হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি শুরু করেন নার্সিং কোর্সে পড়াশুনা। তার স্বপ্ন পূরণের পথে প্রথমে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তার বাবার স্বল্প রোজগার। কিন্তু থেমে থাকেননি এই কিশোরী। টিউশনি করিয়ে যোগাড় করেন পড়ার খরচ।
প্রতিবেশিদের নানা কটূকথা আর পরিবারের চাপ তাকে বাধ্য করে বিল্যবিয়ে করতে। বাল্য বিয়ে নামক সামাজিক কূপ্রথার কবলে পড়ে থেমে যায় দুরন্ত এক কিশোরীর পথচলা।
এভাবেই বাল্যবিয়ে থামিয়ে দেয় মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কিশোরদের স্বপ্নময় ভবিষ্যতকে।
বাল্যবিয়ে নারীস্বাস্থের কতটা ঝুঁকি তৈরি করে সে বিষয়ে পরামর্শ দেন এফসিপিএস ট্রেইনি (গাইনী এন্ড অব) যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর ডাক্তার লামিয়া রশীদ। তিনি বলেন, বাল্যবিয়ের ফলে গর্ভধারনের সময় মা ও শিশুর অনেক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হয়। সাধারণত একজন কিশোরীর শারীরিক গঠন পূর্ণ হয় ২০ বছর বয়সে। এই বয়সের আগে নারীদের জরায়ু পরিপক্ব হয় না ফলে গর্ভধারণ করা হলে ডেলিভারীর সময় আগত শিশু জরায়ুতে আটকে গিয়ে তা ফেটে রক্তপাত হতে পারে, এমনকি শিশুমৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে।
এছাড়াও গর্ভ পরবর্তি কালে একজন কিশোরী মা শিশুকে পরিপূর্ণ স্তনপান করাতে পারে না যে কারণে শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। অল্প বয়সে মা হলে শিশুর ওজন কম হতে পারে। আর পরিণত বয়সে সেই শিশুটিও অপুষ্টির শিকার হয়। আর এভাবেই একটি প্রজন্ম পুষ্টিহীনতায় ভোগে। তাই কিশোরদের বাল্যবিয়ে না দেওয়ার পরমর্শ দেন তিনি।
Recent Comments