এক সময় গ্রাম বা শহরে অনেক যৌথ পরিবার দেখা যেত। মানুষের পুকুরভরা মাছ ছিল, ক্ষেতজুড়ে ধান ছিল, গোয়ালভরা গাভি ছিল। যৌথ পরিবারে অনেক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ছিল। অবস্থাভেদে প্রতিটি পরিবারে সদস্য ছিল ১০ থেকে ১৫ জন। কোথাও বা এর চেয়ে বেশি। পরিবারের কর্তার আদেশ মেনে চলত সবাই। পৃথিবী যত এগিয়ে যাচ্ছে, যৌথ পরিবার তত কমে যাচ্ছে। হারিয়ে যেতে বসেছে যৌথ পরিবার।
কালের বিবর্তনের যৌথ পরিবার বিলিন হবার পথে। সবকটি যৌথ পরিবার ভেঙ্গে গিয়ে স্বামী, স্ত্রী আর সন্তান নিয়ে গড়ে উঠছে একক পরিবার। জীবন ও জীবিকার তাগিদে দিন দিন ছোট হচ্ছে পরিবারের আকার।
সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করা, পারিবারিক বন্ধন দুর্বল, ভবিষ্যৎ সঞ্চয়, চাকুরির বা ব্যবসাসহ নানা প্রয়োজনের জন্য বাড়ছে একক পরিবারের সংখ্যা এমনটা মনে করছেন সুশীল সমাজ। তবে, যৌথ পরিবারকে গুরুত্বপ‚র্ণ বলে মনে করছেন আরো অনেকেই।
যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবার হওয়া ৯০ বছর বয়সের জলেখা বেগম জানান, ২০-২৫ জন নিয়ে ছিলো আগের সেই যৌথ পরিবার। সে সময় গুলোতে ছিলো শান্তি আর হাসি-খুশিতে ভরপুর। এখন সেই আনন্দ গুলো নেই বললেই চলে।
এদিকে লিমা বেগম জানান, ছোট পরিবার থেকে বড় পরিবারে বিয়ে হয়েছে, যেখানে রয়েছে প্রতিনিয়ত আনন্দ আর উল­াস। যা একক পরিবার গুলোতে পাওয়া যায় না। এর মধ্য দিয়ে সন্তান যেমন সকলের আদরে বেড়ে ওঠে, তেমনি তাদের মধ্যে মানবিক ও সামজিক ম‚ল্যবোধও তৈরী হয়।
বাংলাদেশে ঐতিহ্যগতভাবে একসময় যৌথ পরিবার বেশী থাকলেও দিন দিন তা কমছে। বিশেষ করে শহছে বাড়ছে একক পরিবারের সংখ্যা। এমনকি প্রত্যন্ত উপক‚লীয় জনপদেও একই চিত্র। যদিও একসময় দাদা-দাদি ও চাচা-চাচিসহ বাবা-মা’কে নিয়ে এক হাড়িতে চলতো রান্না-বান্না। নানা বাস্তবতা ও প্রতিক‚লতায় এমন দৃশ্য এখন কমই চোখে পড়ে।