ছেলের বয়স ১১ মাস। ১১ মাস বয়সে স্বাভাবিক শিশুরা যেমন কেউ কিছু বললে তাকায় ও হাসিখুশি থাকে, হাত-পা নাড়াচাড়া করে, মা-বাবা বলে ডাকে মাফিয়া বেগমের ছেলে এসব কিছুই করে না। বুকের দুধও খেতে চায় না। এমনটাই জানান, আসলামপুর ৭নং ওয়ার্ডের এক সন্তানের জননী মোসাঃ মাফিয়া (১৮)।
গর্ভকালীন সময়ের জীবন-যাপন সম্পর্কে কথা বলে জানা যায়, ছেলের জন্মের আগে তিনি স্বাস্থ্যসচেতন ছিলেন না। পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার ও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার প্রতি অমনোযোগী ছিলেন। পুরো গর্ভাবস্থায় চেকআপ করেছেন একবার।
শাশুড়ি মমতাজ বেগম (৩০) বলেন, আমার নাতি জন্মের পর থেকেই অস্বাভাবিক। আগেরকার দিনে তো আমরা ডাক্তারের কাছে যাইনি বাড়িতেই ডেলিভারি হয়েছে। আমাদের ছেলে-মেয়ে সবাই সুস্থ্য-সবল আছে। বাড়িতে ডেলিভারি করলে খরচ কম হয় এজন্য যাওয়া হয়নি। কিন্তু এখন চিকিৎসাসেবা চালাতে জমানো টাকা খরচ করার পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ও অনেক টাকা ধার-দেনা করেছেন। কিন্তু ছেলের বয়স ১১মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন দেখছেন না।
চরফ্যাশন সরকারি হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ড. হোসনে আরা বলেন, এখনো মানুষের মাঝে অসচেতনতা রয়েছে। তারা মনে করে একজন গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা মানেই অনেক টাকার ব্যপার। যার কারণে তারা ডাক্তারের পরামর্শ থেকে বিরত থাকছেন। সেক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েরা চাইলে ডেলিভারির সময় সরকারি হাসপাতালে আসতে পারেন, এখানে ফ্রি-ডেলিভারি করা হয়। ডাক্তারের কাছে আসলে নিয়মিত চেকআপ করানোর পাশাপাশি তার স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কি ধরনের সমস্যা রয়েছে তা জেনে সেই সমস্যা থেকে কীভাবে মুক্তি পেতে পারে এবং তার দৈনন্দিন জীবন-যাপন সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া যায়।
বাড়িতেই দাই দিয়ে ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করে কিছু পরিবার। কিন্তু বেশিরভাগ দাইর কাছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকে না এবং সবাই এসব বিষয়ে অভিজ্ঞও না। যার কারণে ডেলিভারির পরে যখন দেখে যে নবজাতক কিংবা মায়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে তখন তাদের করার কিছু থাকে না। বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনতে যেই সময়টা লাগে সেই সময়টাতে শিশু ও মায়ের সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। অনেক সময় দেখা যায় তাদের বাঁচানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। তাই সকল গর্ভবতী মায়েদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই তারা যেন স্বাস্থ্যসচেতন হন এবং ডেলিভারির সময় হাসপাতালে আসে।
রেডিও মেঘনা ৯৯.০এফএম এর ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান “ধীমান” আয়োজনটি শুনতে পান শুক্রবার সকাল ০৮ টা ২৫মিনিটে। শুধুমাত্র রেডিও মেঘনা ৯৯.০এফএম এ।