ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। আমাদের জন্য এ মাছের আর্থসামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। যেসব মৎস্যজীবিগন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, ঝড়-তুফান ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সমুদ্রে মাছ ধরে দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের আমিষ জোগান, সেই সব মৎস্যজীবিদের জীবন কীভাবে কাটে, তা জানতে ও জানাতে এ সপ্তাহে আমরা গিয়েছিলাম ঘোষের হাটের বাংলাবাজার মৎস্য ঘাটে। কথা বলি কয়েকজন মৎস্যজীবিদের সাথে। তাদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এ বছর নদীতে মাছের পরিমান খুবই কম। নদীতে মাছের পরিমান কম থাকার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, নদীতে চরপড়া ও নদীর গভীরতা কমে যাওয়ার কারণে গভীর সমুদ্র থেকে ইলিশ মাছ সাধারণ নদীতে আসতে কিছুটা বাধাগ্রস্থ হয়। এ ছাড়াও নদীর পানিতে কিছুটা লবনাক্ততা রয়েছে।
মৎস্যজীবি জোটন মাঝি দু:খের সাথে আমাদেরকে জানান, মনে অনেক বড় আশা ছিল দীর্ঘদিন নিষেধাঙ্গার পর হয়তো নদীতে বেশি পরিমানে ইলিশ মাছ পড়বে পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু স্বস্তিতে দিন কাটাবো এবং ঋণ পরিশোধ করবো। নিষেধাজ্ঞার পরে নদীতে যাওয়ার পর পরেই বৈরী আবাহাওয়া সহ নিম্নচাপ শুরু এবং সতর্ক সংকেত চলছে তাই জাল, নৌকা রেখে বেকার বসে দিন কাটাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আয় ইনকাম থাকুন আর না থাকুন তিন বেলা সবার খাবার জোগাতে গিয়ে আবার ঋণ করতে হবে এতে করে ঋণের বোঝা আরো বেড়ে যাবে।
সচেতন মহলের (৩৮) বছর বয়সী মো: হাসেম ও বাংলাবাজ মৎস্য ঘাট ব্যবসায়ী মো: মোকসেদ আলম বলেন, আমারা বিগত দিনে ব্যাবসা করেছি আগের তুলনায় এখন নদীতে ইলিশের অবস্থা খুবই খারাপ। এজন্য প্রায় সকল জেলেদের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর। একজন জেলে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা খরচ করে নদীতে গেলে দেখা যায় বিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকার মাছ পায়। এছাড়াও নদীতে লোনা পানি, বৈশ্বিক আবহাওয়ার কারণে নদীতে মাছ কম বলে জেলেদের জীবন জীবীকা ও আমাদের ব্যাবস্যা পরিচালনা করতে খুবই হিমসিম ক্ষেতে হয়।
চরফ্যাসন উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জনাব মারুফ হোসেন মিনার বলেন, মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে অসংখ্য ডুবচর, নদীতে লোনা পানি ও বৃষ্টিপাতের পরিমান কম থাকায় নদীতে ইলিশের পরিমানও কম, তবে আশা করা যায় অধিক বৃষ্টিপাত শুরু হলে নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের দেখা মিলবে।
জেলে জীবন ও প্রাকৃতিক দ‚র্যোগ অনুষ্ঠানটি স¤প্রচারিত হয়ে থাকে সপ্তাহের প্রতি বৃহ:স্পতি বার বিকাল ০৫:৪০ মিনিটে। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা ও শব্দ সম্পাদনায় সাথে ছিলাম লাবনী হোসেন ও প্রযোজনায় ছিলেন মৌসুমী মনিষা।