সামরাজ মৎস্য ঘাটে গিয়ে দেখা যায় একটি বোট প্রায় ১০ থেকে ১১ জন সদস্য নিয়ে ঘাটে ভিড়ে। সাত দিন আগে তারা গভীর সমুদ্রে রওনা করেন মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে। মাছ শিকার শেষে পুনরায় ফিরে আসেন সামরাজ মৎস্য ঘাটে। এইযে ১০, ১১ জন সদস্য, তাদের রান্নাবান্নার জন্য রয়েছে ১৪ বছর বয়সি কিশোর মোঃ ইয়ামিন।

পড়াশোনা করার বয়সে বই-খাতা ছেড়ে কেন কর্ম জীবন বেছে নিয়েছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে ইয়ামিন জানান, প্রথমে পড়াশুনাই করেছিল। অন্যান্য ভাইয়েরাও তখন কর্ম জীবনের সাথে জড়িত ছিলো। তৃতীয় শ্রেণির পড়াশুনা শেষ হওয়ার পরপরই বাবার কোমর ভেঙে যায়। অন্যদিকে কোভিড ১৯ এর প্রভাবে যখন বিদ্যালয় বন্ধ ছিল তখন ইয়ামিন ভাইদের সাথে শহরে চলে যায় কাজের উদ্দেশ্যে। দুই বছর পার করে পুনরায় দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকেই ইয়ামিন সামরাজ ঘাটের এই বোটের মৎস্যজীবীদের রান্নবান্নার কাজ করেন।

এদিকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মাহাবুব কবির জানান, শ্রমের সাথে যুক্ত হওয়া শিশুরা নিম্নআয়ের পরিবারের সদস্য হওয়ায়, দৈনিক যে পরিমাণ শ্রম দেয় সে অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করতে পারেনা। ফলে শিশুটি শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই সকল শিশুরা।

এ বিষয়ে চরফ্যাশন থানা অফিসার ইনর্চাজ মোঃ শাখাওয়াত হোসেন জানান, ১৮ বছর বয়সের নিচে যে সকল শিশুরা বিভিন্ন কলকারখানা, দোকানপাট ইত্যাদিতে শ্রম দেয় তাদের শিশু শ্রমিক বলা হয়। এই শিশুদেরকে যারা শ্রমের সাথে নিয়োজিত করে তাদেরকে শিশু আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হয়। এছাড়াও যারা শিশুদেরকে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ নেয় তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

শিশুদের সঠিক জীবনযাপন নিয়ে রেডিও মেঘনার সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান “আজকের শিশু”। শুনুন ৯৯.০ এফএমে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যা ০৬:০০টায়।

উপস্থাপনায়: ফারিহা ইসলাম, প্রযোজনায়: উম্মে নিশি।