খোলা আকাশের নিচে উঠোন জুরে হোগলা পাতার পাখা ও মাদুর তৈরির দৃশ্য হারহামেশেই গ্রাম-গঞ্জে দেখা যেত। প্রচন্ড গরমে স্ত্রী তার স্বামীকে হোগল পাতার পাখা দিয়ে বাতাস দেওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হওয়া ছিল চিরচেনা এক দৃশ্য। কালের বিবর্তনে সভ্যতার নতুন দিগন্তে হোগলা পাতা অনেকটা বিলুাপিÍর পথে। কিন্তু এখনো কিছু গ্রাম অঞ্চলে আয়ের উৎস্য হিসেবে বেঁচে আছে হোগল পাতার পাখার প্রচলন।
হোগলা পাতার কদর সবচেয়ে বেশি দেখা যেত বিশ-শতকের আগে। গ্রামের হাটবাজারে, নববর্ষের মেলায় প্রতিটি দোকানে তখন থরে থরে সাজানো থাকতো নানা রকমের পাখা। অনেকেই তখন হাত পাখা কিনে হাটতে হাটতে মেলা থেকে বাড়ি ফিরতো। তখন এতোটা আধুনিকতার ছোয়া লাগেনি গ্রাম-গঞ্জে। তাল, হোগলা পাতার পাখাই ছিলো শীর্ষে।
চরফ্যাসন উপজেলার আমিনাবাদ এলাকার ৫৫ বছর বয়সি মোঃ মোস্তফা জানান, তিনি পেশায় একজন হস্তশিল্প। এখনো এই পেশা ধরে রাখার জন্য ১৫ বছর যাবৎ হোগলা পাতার পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। সন্তানদের পড়াশুনার খরচ থেকে শুরু করে সংসার চালানোর একমাত্র মাধ্যমই হলো হোগল পাখার ব্যবসা। দৈনিক ৩০টি পাখা পিজ প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ধরে হাজার টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।
মোঃ মোস্তফা মিয়ার স্ত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বাসায় বসে সংসারের আয় বৃদ্ধির জন্য নিজ হাতে একাই পাখা বুনে থাকেন। ভবিষ্যতেও এই হস্তশিল্পের কাজ ধরে রাখবেন।
ইলেক্ট্রনিক যুগে এসে হোগল পাতার পাখা অনেকটা বিলুপ্তির পথে হলেও গ্রাম-গঞ্জের মানুষের কাছে চিরচেনা এই হোগলপাতার পাখা। এর ব্যবহার তুলনা মূলক কম হলেও এর ঐতিহ্য হাজার বছরের। আধুনিকতার সাথে পাল্লা দিয়ে উঠতে না পারলেও মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে এ পাখা।

অধরা ইসলাম ও মৌসুমী মনীষা
রেডিও মেঘনা-চরফ্যাসন।