বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে রুপ নেওয়ায় উপকূল এলাকায় গত ১৬ নভেম্বর ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেতের তথ্য জানার পর উপজেলা প্রশাসনের পাশপাশি রেডিও মেঘনায় সম্প্রচারকালে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ববতী, চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে করণীয় ও আবহাওয়ার সতর্কতামূলক বার্তা প্রচার শুরু করা হয়।

এরপরে ১৭ নভেম্বর শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে আবহাওয়া অফিস জানায়, পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে জনসাধারণের সচেতনতা বাড়িয়ে তুলতে এবং নিরাপদে আশ্রয় যেতে ১৭ নভেম্বর শুক্রবার সকাল থেকে রেডিও মেঘনায় বিরতিহীন সম্প্রচারের মাধ্যমে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিন প্রচার করা হয়।  সেইসাথে রেডিও মেঘনায় দিনব্যাপী ভোলাসহ চরফ্যাশনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসক, চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মনপুরা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিপিপি কর্মকর্তাগণের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে প্রচার করা হয়।

এছাড়া চরফ্যাশনের প্রশাসন প্রতিটি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় প্রস্ততি কর্মসূচি সিপিপিও রেক্রিসেন্ট এর সদস্যরা সচেতনতামূলক মাইংকি করে। এছাড়া নদীবেষ্টিত এলাকার জনসাধারণকে নিরাপদে রাখতে ২৬৫ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়।

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে সারাদেশের ন্যায় উপকূলীয় জেলা ভোলার সাত উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে চরফ্যাশনের নিম্মাঞ্চলের  প্রায় ২১৯টি কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত এবং শতাধিক গাছপালা উপড়ে পড়েছে।  এই উপজেলায় আমন ধানেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, ক্ষেতে থাকা আমন ধানের শতকরা ২১ ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে শীতকালীন সবজি, পান, আগাম জাতের সরিষা, খেসারি ও গম। ঢালচরে কিছু মাছ ধরার ট্রলারও ডুবে যায়। পরে প্রতিটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করছেন। তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করার আশ্বাস দেওয়া হয়।